অতিপ্রাকৃত চিন্তাধারা ৪

প্রতিকী ছবি / তালহা 

প্রভু পুনরায় পৃথিবী গঠন করলেন। মানব তৈরি করলেন। এবার মানবকে নিজের জন্য কিছু চাইবার একটি মাত্র সুযোগ দিলেন।

- বলো, পূর্ববর্তী পৃথিবীর বিচরণ অভিজ্ঞতা থেকে নতুন পৃথিবীতে তুমি কি চাও? - প্রভু, স্মৃতি সঞ্চয়কারী মস্তিষ্ক আমি চাই না! - তোমাকে স্মৃতি দেওয়া হয়েছে, যেনো পুরোনো ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি না হয়। ভ্রান্তির কারণগুলো যেনো তোমার আগামীর সক্ষমতা হয়ে ওঠে তাই। - আপনি সর্বজ্ঞানী। তবুও চাইছি প্রভু। অন্তত আমাকে এমন শক্তি দিন- যেনো আমি অপ্রয়োজনীয় স্মৃতি নিমেষেই মুছে ফেলতে পারি।
প্রভু এবার রাজি হলেন। সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পূর্ণ হওয়ার পর মানবকুলকে পৃথিবীতে ছেড়ে দিলেন। নতুন পৃথিবী পেয়ে মানবেরা পূর্বের পৃথিবীর মতোই বিচরণ করতে লাগলো। নিয়মমাফিক একের পর এক বছর পেরুতে লাগলো। পূর্বের ন্যায় তাদের জমতে শুরু করলো সুখাদি সহ নানাবিধ বিষাদময় স্মৃতিজ্ঞান। তবে এবার তাদের বিশেষ শক্তি আছে। চাইলেই তারা যেকোনো স্মৃতি চিরতরে মুছে ফেলতে পারে। তীব্র স্মৃতি ব্যথায় কাতর এক মানব গোধূলিতে এসে সিদ্ধান্ত নিলো- সকল ব্যথাতুর স্মৃতি মুছে ফেলবে। মানব তার প্রাপ্ত দৈবজ্ঞানে স্মৃতি মুছে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করলো... প্রক্রিয়া শেষ না করেই মানব উঠে দাঁড়ালো। মানব ভাবছে, স্মৃতি মুছে দিলেই তো শেষ। তার চেয়ে থাকুক না বরং দুঃখের অপ্রিয় স্মৃতি হয়ে। যাতে দুঃখ-সুখের তুলনায় তার সুখের স্মৃতি গুলো বেরস না হয়ে যায়। মানব পুনরায় বুকে পাথর নিয়ে হাসি মুখে অন্যান্য বিচরণকারীদের মাঝে মিশে গেলো। প্রভু সবটাই দেখলেন। বোধহয় কিছুটা মুচকিও হাসলেন...


রেদোয়ান আহমেদ
১৪ মাঘ ১৪২৮ / শুক্রবার
নারায়ণগঞ্জ।

মন্তব্যসমূহ

_________________________________________________

এখানে প্রকাশিত সমস্ত লেখা 'রেদোয়ান আহমেদ' কর্তৃক সংগৃহীত। © ২০২১-২০২৫